কেএম সুজন,স্টাফ রিপোর্টারঃ
জন্ম হোক যথাতথা কর্ম হোক ভাল-প্রচলিত এই প্রবাদটির সাথে বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রেই মিল খুঁজে পাওয়া ভার।জন্ম নয়,কর্মেই মানুষের পরিচিতি প্রকাশ পায়।টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ধুবড়িয়া গ্রামের কৃতি সন্তান আসাদুজ্জামান রনি নাম ঠিকানা অজানা মানসিক ভারসাম্যহীন একটি মেয়েকে আদর যত্নে লালন পালন করে দীর্ঘ ১১ বছর পর তুলে দিলেন তার পরিবারের নিকট । রনি দীর্ঘ প্রায় ১১ বছর মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীকে আশ্রয় দিয়ে তার সকল দায়ীত্ব নিজ কাধে তুলে নেন। সেই সাথে তার পরিচয় ও পরিবারের সন্ধান করতে বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা চালান। কোন উপায় না পেয়ে রনি ফেসবুকে মেয়েটির সন্ধান পেতে ছবি সম্বলীত একটি পোষ্ট দেন। ফেসবুকের সুফলে পাওয়া যায় মেয়েটির পরিবারের সন্ধান।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়েটিকে ২০১০ সালের দিকে ধুবড়িয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে দেখা গেছে। এর মধ্যে ডিজিটাল বলরামপুর বাজার, পুরাতন বাজার, ধুবড়িয়া তেরাস্তা বাজারে উদ্দেশ্যবিহীন ভাবে ঘুরতে দেখা যায়। মেয়েটিকে স্থানীয় লোকজন নাম পরিচয় জিজ্ঞেস করলে সে কিছুই বলতে পারত না। ভারসাম্যহীন মেয়েটি যখন কোথাও আশ্রয় পাচ্ছিল না তখন মেয়েটি ধুবড়িয়া তেরাস্তা বাজারে এসে আশ্রয় নেয়। সেই সময় মেয়েটির লালন পালনের দ্বায়িত্ব ভার স্বেচ্ছায় নিজের কাধে তুলে নেন স” মিলের মালিক রনি । সে ধুবড়িয়া তেরাস্তা বাজার কমিটির সভাপতি আসাদুজ্জামান রনি। তিনি নাম পরিচয়হীন মেয়েটির নাম দেন লাইলী। সেই সাথে মেয়েটিকে পরিবারের নিকট ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকেন। অবশেষে দীর্ঘ ১১বছর পর মেয়েটির পরিবারের সন্ধান পান তিনি। জানা যায় লাইলীর আসল নাম দূর্গা রানী। স্বামীর নাম রমেশ, বাড়ি দিনাজপুরের সস্তীতলা শহীদুল কলোনী। মেয়েটির বাবার বাড়ি বগুড়া জেলার সান্তাহারের সুইপার কলোনী।
এ ব্যাপারে রনি অশ্রুসিক্ত নয়নে বলেন, মেয়েটিকে তার পরিবারের নিকট ফিরিয়ে দিতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। মেয়েটি যেন বাকি জীবনটা তার পরিবারের সাথে সুখে শান্তিতে দিন কাটাতে পারে। সৃষ্টিকর্তার নিকট সেই প্রার্থনা করি। তিনি আরোও বলেন, দূর্গার সুচিকিৎসার জন্য প্রয়োজনে সকল প্রকার সাহায্য সহায়তা আমি করবো।
এ বিষয়ে বগুড়া জেলার শান্তাহার উপজেলার সুইপার কলোনী গ্রামের রতন হরিজনের ছেলে নাদিম হরিজন, আরমান হরিজন, শাকিল হরিজন, প্রদীপ হরিজন, রিপন হরিজন বলেন, প্রায় ১১ বছর রনি ভাই আমাদের বোনকে স্বযত্নে লালন পালন করে আজ আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিচ্ছেন। এটা মানবতার এক অনন্য উদাহরণ। আমাদের বোনকে ফিরে পেয়ে আমরা খুবই আনন্দিত। রনি ভাইকে ধন্যবাদ দেয়ার ভাষা আমাদের জানা নেই।
ধুবড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. শাকিল হোসেন ও বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মতিয়ার রহমান বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন করেছেন। তাই আজ দূর্গা হরীজনকে তার পরিবার কাছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের সহয়তায় তারা খুঁজে পেয়েছেন।